কেন্দ্রীয় সরকারের তারবন্দি যোজনায় আবেদন করে পেয়ে যান ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সারা দেশের সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে নানা ধরনের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছিল। সমগ্র ভারতের কৃষক,নারী, শিশু থেকে শুরু করে দরিদ্র অসহায় জনগণ প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে কার্যকরী এই সমস্ত প্রকল্পের আওতায় অনুদান পেয়ে থাকেন। তবে শুধুমাত্র অনুদানের টাকা নয়, এই সমস্ত প্রকল্পের অধীনে সাধারণ জনগণ নানাবিধ সুবিধাও পেয়ে থাকেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী এইসকল প্রকল্পের মধ্যে কৃষকদের জন্য যে সকল প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে সেগুলি সারা দেশের সাধারণ জনগণ তথা কৃষকদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই সমস্ত যোজনার তালিকায় প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ পেনশন যোজনা, কিষাণ সহায় যোজনা সহ একাধিক প্রকল্প এবং যোজনার নাম রয়েছে। তবে বর্তমানে সমগ্র ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের মধ্যে তারবন্দি যোজনা নিয়ে নানাবিধ আলাপ আলোচনার সূত্রপাত ঘটেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে কার্যকরী এই যোজনার মাধ্যমে এমন এক অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে কৃষকরা অত্যন্ত সহজেই তাদের জমির ফসলকে যেকোনো পশু, পাখির হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন। আমাদের চারপাশে থাকা নানাবিধ পশু, পাখি চাষের জমিতে ঢুকে কৃষকদের ফসলের সমূহ ক্ষতি করে থাকে, যার ফলে কৃষকদের লোকসানের সম্ভাবনা থেকে যায়। এমনকি পরবর্তীতে কৃষকদের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। আর এই সমস্ত সমস্যা থেকে কৃষকদের মুক্তি দিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে তারবন্দি যোজনা কার্যকর করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী এই যোজনাটি বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করায় সমগ্র দেশের কৃষকদের মধ্যে যোজনাটি নিয়ে নানা ধরনের চর্চা শুরু হয়েছে। আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা তারবন্দি যোজনা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

তারবন্দি যোজনা কি?

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে সমগ্র দেশের কৃষকদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে, কৃষকদের কৃষি জমির ফসল যাতে পশু, পাখিরা নষ্ট না করতে পারে তার জন্যই প্রধানমন্ত্রী তারবন্দি যোজনা কার্যকর করা হয়েছে। এই যোজনার মাধ্যমে সমগ্র ভারতের কৃষকদের কৃষিজমিকে তারবন্দি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় খরচের ৫০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হয়ে থাকে। কৃষকদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, যেকোনো কৃষি জমিকে তার বন্দি করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকার ভর্তুকি প্রদান করা হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় কৃষকরা প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তাদের জমি তার বন্দি করতে পারেন না, যার ফলে তাদের বারংবার লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এইরুপ এক অভিনব যোজনা কার্যকর করা হয়েছে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্যে।

আরও পড়ুন:- ভিসা ছাড়াই শুধুমাত্র ভারতীয় পাসপোর্টের মাধ্যমে কোন কোন দেশে ভ্রমণে যেতে পারবেন, জেনে নিন।

কারা তারবন্দি যোজনার আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন?

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে কার্যকরী এই তারবন্দি যোজনায় আবেদনের ক্ষেত্রে কৃষকদের বেশ কতগুলি শর্ত পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষকদের যে যে শর্তগুলি মেনে চলতে হবে তা হল:-

১. তারবন্দি যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী কৃষক বর্তমানে যে রাজ্যে বসবাস করছেন তাকে উক্ত রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। অর্থাৎ কেবলমাত্র ভারতের আওতাভুক্ত রাজ্যগুলির স্থায়ী বাসিন্দারাই এই যোজনার সুবিধা পাবেন।

২. যে সমস্ত কৃষকের ন্যূনতম ০.৫ হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে তারাই কেবলমাত্র এই যোজনার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।

৩. যে সমস্ত কৃষকরা এই সংক্রান্ত অন্য কোনো যোজনার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন এবং ইতিপূর্বে অনুদান পেয়েছেন তারা কোনোভাবেই তারবন্দি যোজনার আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন না।

৪. যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে তারাই কেবলমাত্র এই যোজনার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তারবন্দি যোজনার সুবিধাভোগী কৃষকদের অনুদানের টাকা সরাসরি তাদের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে, যার কারণে কেন্দ্র সরকারের তরফে এইরূপ শর্ত জারি করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে।

কিভাবে তারবন্দি যোজনার আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব?

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, যে সমস্ত কৃষকরা নিজেদের কৃষিজমিকে তার বন্দি করার মাধ্যমে সুরক্ষিত করতে চান তাদের প্রথমেই নিজের নিকটবর্তী কৃষি অফিসে গিয়ে তারবন্দি যোজনার আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে উক্ত কৃষি অফিসের কর্তৃপক্ষ আপনাকে তারবন্দি যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ধাপগুলি সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে। অর্থাৎ আপনার বাড়ির নিকটবর্তী কৃষি অফিসের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই আপনি তারবন্দি যোজনার আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন, অনলাইনের মাধ্যমে কোনভাবেই তারবন্দি যোজনার আওতায় আবেদন জানানো সম্ভব নয়।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সমূহ:-

তারবন্দি যোজনার আওতায় নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কতগুলি নথি আপনার বাড়ির নিকটবর্তী কৃষি অফিসে জমা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি হল:-

১. আবেদনকারী কৃষকের আধার কার্ড।
২. আবেদনকারী কৃষক বর্তমানে যে রাজ্যে বসবাস করছেন উক্ত রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট।
৩. আবেদনকারী কৃষকের নিজস্ব জমির প্রমাণ্য নথি।
৪. আবেদনকারীর রেশন কার্ড।
৫. আবেদনকারী কৃষকের ফটো আইডেন্টিটি প্রুফ।
৬. আবেদনে ইচ্ছুক কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য।
৭. আবেদনকারীর বৈধ মোবাইল নম্বর।
৮. আবেদনকারী কৃষকের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

Leave a Comment