সময় যতই এগোচ্ছে নতুন প্রজন্মের মধ্যে নিজের পছন্দ অনুসারে ক্যারিয়ার নির্বাচনের প্রবণতাও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমগ্র ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এমন প্রচুর যুবক-যুবতী রয়েছে যারা ন’টা-পাঁচটার চাকরিতে যোগ না দিয়ে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান। তবে ব্যবসার শুরু করার সিদ্ধান্তের তুলনায় কিসের ব্যবসা শুরু করলে যথেষ্ট টাকা লাভ করা যাবে তা নির্ধারণ করাটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই আজ আমরা ব্যবসায় ইচ্ছুক যুবক-যুবতীদের জন্য এমন এক বিশেষ ব্যবসার উপায় নিয়ে হাজির হয়েছি যার মাধ্যমে তারা প্রতি মাসে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।
চলুন তবে ব্যবসার এই নতুন আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:-
৮ থেকে ৮০ সকলেরই মুখরোচক বিভিন্ন ধরনের খাবার পছন্দ। শুধু তাই নয় দূরপাল্লার যাত্রা হোক বা বিকেলের লং ড্রাইভ সমস্ত ক্ষেত্রেই সঙ্গী হিসেবে থাকে নানান ধরনের মুখরোচক খাবার, আর সেই খাবারের তালিকায় যদি চিপস থাকে তবে তো আর কথাই নেই। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতীয় জনসাধারণের মধ্যে চিপস সহ অন্যান্য মুখরোচক খাবারের চাহিদা ক্রমাগত হারে বাড়ছে। আর বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক খাবারের বাড়তে থাকা চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আপনিও বর্তমানে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আজ্ঞে হ্যাঁ, এখন আপনি বাড়িতে বসেই আলুর চিপস তৈরি করার মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন, যার মাধ্যমে আপনি প্রত্যেক মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন। আর আজকের এই পোস্টে আমরা আলুর চিপসের ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।
আলুর চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জায়গা:-
আলু চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার অন্ততপক্ষে ২০০ বর্গমিটার জায়গা প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে আপনার বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা থেকে থাকে তবে আপনি নিজের বাড়িতে বসেই আলুর চিপস তৈরি করার মাধ্যমে ব্যবসাটি চালাতে পারবেন। তবে আপনার বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না থাকে তবে আপনার নিকটবর্তী লোকাল মার্কেটে কিংবা আপনার পছন্দসই যেকোনো জায়গায় অন্ততপক্ষে ২০০ বর্গমিটার জায়গা সহ একটি ঘর ভাড়া নেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
আলুর চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি:-
ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে মূলত আলুর চিপস তৈরির মেশিন প্রয়োজন হয়ে থাকে, তবে আপনি চাইলে নিজেই আলুর চিপস তৈরি করতে পারবেন। তবে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে প্রচুর আলুর চিপস তৈরি করার ক্ষেত্রে আলুর চিপস তৈরির মেশিন ব্যবহার করাই শ্রেয়। আলুর চিপসের মেশিনের পাশাপাশি আলু, চিপসের মসলা, চিপস্গুলিকে প্যাকেট জাতীয় করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, এই সমস্ত দ্রব্যগুলি আপনি আপনার বাড়ির নিকটবর্তী যেকোনো লোকাল মার্কেট থেকেই সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে যেকোনো অনলাইন মার্কেটিং সাইট থেকেও এই সমস্ত দ্রব্যগুলি কিনে নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- FAEA স্কলারশিপে আবেদন করুন এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত খরচ পেয়ে যান।
আলুর চিপস বাজারজাতকরণ:-
আলুর চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই নিজের কোম্পানির একটি নাম নির্বাচন করতে হবে। এরপর আপনার কোম্পানির নাম অনুসারে চিপসের প্যাকেট তৈরি করতে হবে। সবশেষে আলুর চিপস তৈরি করে সেগুলিকে ভালোভাবে প্যাকেজিং যাতে আপনার নিকটবর্তী লোকাল মার্কেটে থাকা সমস্ত স্ন্যাক্সের দোকানে সাপ্লাই করার মাধ্যমে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এক্ষত্রে আপনার নিকটবর্তী লোকাল মার্কেটে থাকা স্ন্যাক্সের দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলে তাদের চাহিদা অনুসারে আলুর চিপস সরবরাহ করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
আলুর চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে আলুর চিপসের কোয়ালিটি এবং প্যাকেজিংয়ের উপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। আপনার তৈরি চিপসগুলি যদি যথেষ্ট ভালো কোয়ালিটির হয়ে থাকে তবে খুব দ্রুত তা লোকাল মার্কেট থেকে শুরু করে গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করবে। এছাড়াও আপনি অনলাইনের মাধ্যমে নিজের ব্যবসাটি বড় করে তুলতে পারবেন। ফ্লিপকার্ট থেকে শুরু করে বিগ বাস্কেটের মত অ্যাপ এবং হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে আপনি নিজস্ব ব্যবসাটিকে সম্পর্কে প্রচুর মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবেন এবং নিজস্ব ব্যবসাটিকে বড় করতে পারবেন।
ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ:-
আলুর চিপসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনি যদি আলুর চিপস তৈরির মেশিন কিনে ব্যবসা শুরু করেন তবে আপনাকে ৮০,০০০ থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হবে। অন্যদিকে আপনি যদি বাড়িতে নিজের হাতেই চিপস তৈরি করেন তাহলে মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে আপনি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
আলুর চিপসের ব্যবসা থেকে লাভ:-
বিভিন্ন সূত্রের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, আলুর চিপসের ব্যবসা থেকে প্রত্যেক মাসে অন্ততপক্ষে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনার তৈরি আলুর চিপসের কোয়ালিটি যদি খুব ভালো হয় এবং তা মার্কেটে জায়গা করে নিতে পারে তবে আপনি প্রত্যেক মাসে ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন।