সমগ্র ভারতজুড়ে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যারা নিজস্ব বাড়ি তৈরি স্বপ্ন দেখেন। তবে জীবনের অন্যান্য সমস্ত লক্ষ্য পূরণের মতোই বাড়ি তৈরির স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রেও সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ প্রয়োজন। যে সমস্ত ব্যক্তিরা ৪০ বছর বয়স হওয়ার আগেই নিজস্ব বাড়ি তৈরি স্বপ্ন দেখেন তাদের ক্ষেত্রে সঠিক সময় নিজস্ব বাড়ি তৈরির জন্য যথাযথ পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি অবশ্য প্রয়োজনীয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ৪০ বছর বয়স বেরোনোর পূর্বেই নিজস্ব বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলি নিয়ে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন:-
নিজস্ব বাড়ি তৈরির স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে আপনাকে নিজের আয়, ব্যয় এবং সঞ্চয়ের দিকে বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে। এছাড়াও কোন ধরনের সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন সেই বিষয়েও সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে বাড়ি তৈরির যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে যে বিষয় সম্পর্কে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন তা হল-
১. লক্ষ্য নির্ধারণ:-
বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে অথবা বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই বাড়ির দাম সম্পর্কে অবগত হতে হবে। এছাড়াও বাড়ির পাশাপাশি বাড়ির অন্দরসজ্জা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে বিশেষভাবে জানা প্রয়োজন। বাড়ি তৈরি এবং বাড়ির অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে কত টাকা প্রয়োজন তা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকলে কোন ক্ষেত্রে কত টাকা বিনিয়োগ করবেন তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে না। ফলত নিজস্ব বাড়ি তৈরী কিংবা বাড়ি কেনার লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই আবশ্যক খরচ সম্পর্কে জানতে হবে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় খরচ অনুসারে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:- আবারো বাড়তে পারে রেলের ভাড়া, টিকিটের দাম ঘিরে বাড়ছে জল্পনা।
২. মিউচুয়াল ফান্ড নির্বাচন:-
যারা খানিকটা হলেও ঝুঁকি নিতে আগ্রহী তাদের জন্য মিউচুয়াল ফান্ড একেবারে আদর্শ। এক্ষেত্রে মিউচুয়াল ফান্ডের স্কিম নির্বাচনের সময় প্রয়োজনীয় আমানতের পরিমাণ, ঝুঁকি, বিনিয়োগের সময়কাল এবং নিজস্ব লক্ষ্যের কথা মাথায় রেখেই স্কিম নির্বাচন করবেন। সমস্ত টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দেখে নিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারলে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আমানত সংগ্রহ করার জন্য এটি একেবারে পারফেক্ট। নাগরিকদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, দীর্ঘমেয়াদি সম্পদের জন্য রয়েছে ইক্যুইটি ফান্ড। স্থিতিশীলতা এবং নিয়মিত আয়ের জন্য রয়েছে ডেট ফান্ড। আপনি চাইলে উপরোক্ত দুটি স্কিমের সংমিশ্রণ বেছে নিয়ে পোর্টফোলিওতে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন।
অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ডে নিয়মিত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবথেকে উল্লেখযোগ্য স্কিম হল এসআইপি। অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দ অনুসারে মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক পদ্ধতি বেছে নিতে পারবেন। এছাড়াও এসআইপি -এর মাধ্যমে আপনি কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট এবং রুপি কস্ট অ্যাভারেজিং -এর সুবিধা পেয়ে যাবেন। এসআইপিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি আপনার বিনিয়োগ শৃঙ্খল বজায় রাখতে পারবেন এবং যথেষ্ট দ্রুততার সাথে নিজস্ব বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আমানত সংগ্রহ করতে পারবেন।
৩. আর্থিক উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ:-
নিজস্ব বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক লক্ষ্য নির্বাচনের পর সঞ্চয় প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়লে আপনি আর্থিক উপদেষ্টার মতামত নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আর্থিক উপদেষ্টা আপনার লক্ষ্য এবং আমানতের পরিমাণ বিচার করে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প, প্রকল্পের ঝুঁকি এবং লাভের বিষয়গুলি সম্পর্কে আপনাকে জানাতে পারবেন। এছাড়াও কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে আপনি সবথেকে বেশি সুবিধা পাবেন তা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও আর্থিক উপদেষ্টা আপনাকে সহায়তা করতে পারবেন। এমনকি মিউচুয়াল ফান্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হলেও আর্থিক উপদেষ্টার মাধ্যমে আপনি আপনার আর্থিক লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে আবশ্যক মিউচুয়াল ফান্ডটিও নির্বাচন করে নিতে পারবেন।