সমগ্র ভারতজুড়ে নারী শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের স্বাবলম্বীতার হারও বাড়ছে। আর নারী উন্নয়নের সাথে সাথে উপার্জনশীল নারীর হারও ক্রমাগত হারে বাড়ছে, ফলত নানা ধরনের সঞ্চয় প্রকল্পে নারীদের বিনিয়োগের পরিমাণও ক্রমাগত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার জেরে বর্তমানে পুরুষদের মতোই নারীরাও নিজেদের পরিবার, সন্তান এবং নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার খাতিরে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ প্রকল্পে মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। তবে কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে সর্বাধিক লাভ পাওয়া সম্ভব তা নিয়ে বারংবার বিভিন্ন প্রকার চর্চার সূচপাত ঘটেছে, যার কারণে আজকের এই পোস্টে আমরা কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা অধিক লাভজনক তা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক নারীদের জন্য সর্বাধিক লাভজনক বিনিয়োগের স্কিম কোনগুলি?
পাবলিক প্রোভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ:-
মহিলারা নিজের এবং নিজের পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার খাতিরে পাবলিক প্রোভিডেন্ট ফান্ডের অধীনে বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের অধীনে ৭.৯ % হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে এবং ম্যাচিউরিটির পর সুদসহ যে অর্থ ফেরত পাওয়া যায় তার উপরে কোনরূপ কর জারি করা হয় না। অর্থাৎ পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের অধীনে ৮০ সি ধারার অধীনে কর ছাড় পাওয়া যায়। নূন্যতম ৫০০ টাকা দিয়েই এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগ করা যায়, অন্যদিকে এই স্কিমের অধীনে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা সম্ভব। যদিও এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১৫ বছরের লক ইন পিরিয়ড থাকে, তবে এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগ করার দিন থেকে ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর আংশিক অর্থ তোলা যায়। সুতরাং মহিলারা অনায়াসেই এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগ করতে পারেন।
এনএসপি এর অধীনে বিনিয়োগ:-
এনএসপি বা ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম হল সরকার সমর্থিত এক বিশেষ ধরনের স্কিম, যার আওতায় বিনিয়োগকারীর অর্থ ইক্যুইটি, সরকারি বন্ড, লিকুইড ফান্ড, কর্পোরেট বন্ড এবং স্থায়ী আর্থিক উপকরণ সহ মিশ্র পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিবছরে সর্বনিম্ন ৬০০০ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে স্কিমের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব। এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগকারীরা ১০% হারে সুদ পেয়ে থাকেন। ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী বয়সে যেকোনো নাগরিক এই স্কিমের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। সুতরাং আপনিও যদি বৃদ্ধ বয়সের জন্য সঞ্চয় করতে চান তবে ন্যাশনাল পেনশন স্কিম আপনার জন্য একেবারে পারফেক্ট।
মিউচুয়াল ফান্ডের অধীনে বিনিয়োগ:-
যেসমস্ত মহিলা মাঝারি থেকে উচ্চ ঝুঁকি নিতে সক্ষম তারা মিউচুয়াল ফান্ডের অধীনে বিনিয়োগ করতে পারেন। নিজের সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করে মিউচুয়াল ফান্ডের অধীনে ইক্যুইটি, ডেবট বা হাইব্রিড ফান্ডে বিনিয়োগ করা সম্ভব। নতুন বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে এসআইপি একেবারে পারফেক্ট, সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এসআইপি -এর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়াও ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিমের অধীনেও বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৩ বছরের লকইন পিরিয়ড নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণ টাকা ফেরত পেতে চান তবে ৫ থেকে ৭ বছরের জন্য বিনিয়োগ করাই শ্রেয়। এছাড়াও এই স্কিমের অধীনে আসি ৮০ সি ধারায় করে ছাড় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:- কিভাবে নিজের গতিপথ নির্ধারণ করবে চন্দ্রযান ৩, কি বলছে ইসরোর বিজ্ঞানীরা?
জীবন বীমার অধীনে বিনিয়োগ:-
নিজের সন্তান এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার খাতিরে মহিলারা জীবন বীমার অধীনে বিনিয়োগ করতেই পারেন। মূলত যেসকল মহিলাদের পরিবারে তার উপর নির্ভরশীল কোনো ব্যক্তি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জীবনবীমা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
স্বাস্থ্য বিমা:-
সময় যতই এগিয়েছে সমগ্র রাজ্য তথা দেশব্যাপী চিকিৎসা ক্ষেত্রের খরচও কমাগত হারে বাড়ছে। আর তাতেই বহু সংখ্যক মানুষ নিজের এবং নিজের পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য বীমার অধীনে বিনিয়োগ করে থাকেন। সুতরাং আপনিও যদি আপনার এবং আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করতে চান তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবীমার অধীনে বিনিয়োগ করুন। এতে একদিকে যেমন সঞ্চয় অক্ষত থাকবে অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত খরচও বহন করা অত্যন্ত সহজ হবে।