আখের রসের ব্যাবসা করে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করুন।

অত্যন্ত গরমে সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাঁচতে প্রায় প্রত্যেক মানুষই আখের রস খেয়ে থাকেন। তবে শুধুমাত্র তাপ থেকে বাঁচতে নয়, শরীরের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী হওয়ায় সম্পূর্ণ গ্রীষ্মকাল জুড়ে আখের রসের চাহিদার রীতিমতো তুঙ্গে থাকে। আর আখের রসের এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে আপনি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

আখের রসের ব্যবসা শুরু করছে কি কি প্রয়োজন হয়ে থাকে?

আখের রসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে মূলত আখের রস তৈরির মেশিন প্রয়োজন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার চাহিদা অনুসারে হস্তচালিত মেশিন কিনতে পারেন অথবা বিদ্যুৎ চালিত অটোমেটিক মেশিন কিনতে পারেন। আখের রস তৈরির মেশিন আপনি আপনার জেলার যেকোনো বড় মার্কেট থেকে কিনে নিতে পারবেন অথবা ফ্লিপকার্ট কিংবা অ্যামাজন -এর মত যেকোনো অনলাইন মার্কেটিং অ্যাপ থেকেও আপনি এই মেশিন কিনে নিতে পারবেন। আখের রসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আখের রস তৈরির মেশিন ছাড়াও আখ, লেবু, নুন, বরফ, পুদিনা সহ আখের রস রাখার পাত্র, পেপার কাপ প্রয়োজন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, আপনারা সরাসরি কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করে আখ কিনে নিতে পারেন, এতে আপনারা বাজারের তুলনায় স্বল্পমূল্যে আখ পেয়ে যাবেন।

আখের রসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে কিরকম জায়গা প্রয়োজন হবে?

আখের রসের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে এমন একটি জায়গা বেছে নিতে হবে যেখানে প্রত্যেকদিন প্রচুর লোক সমাগম হয়ে থাকে। এর জন্য আপনি আপনার এলাকার লোকাল মার্কেট, স্টেশনের আশেপাশের যেকোনো জায়গা, বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশের জায়গা, স্কুল অথবা কলেজের আশেপাশের যেকোনো জায়গা অথবা হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী জায়গা বেছে নিতে পারেন।

কিভাবে আখের রসের ব্যবসা শুরু করবেন?

মূলত দুইভাবে আপনি আখের রসের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন প্রথমত নিজস্ব দোকান শুরু করে, দ্বিতীয়ত নিজস্ব ঠেলাগাড়ির মাধ্যমে।

আরও পড়ুন:- বিশ্ববীণা স্কলারশিপে আবেদন করুন এবং কোর্স ফি, হোস্টেল ফি সহ পড়াশোনার অন্যান্য খরচ পেয়ে যান।

১. নিজস্ব দোকান শুরু করে আখের রসের ব্যবসা:- এর জন্য আপনাকে নিজের পছন্দসই একটি জায়গায় দোকান ভাড়া নিতে হবে অথবা আপনি চাইলে দোকান কিনেও নিতে পারেন। এরপর দোকানটিকে বেশ কিছু চেয়ার-টেবিলের মাধ্যমে সাজিয়ে নিতে পারেন। এতে লোকজন এসে বসার সুযোগ পাবে ফলত আপনার বিক্রিও বাড়বে। দোকানে আখের রস তৈরির মেশিন লাগিয়ে সেটির মাধ্যমে আখের রস বের করতে হবে এবং আখের রস কাপে সাজিয়ে সুন্দর করে পরিবেশন করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, গ্রাহক আসা মাত্রই আখের রস বের করে তার হাতে ফ্রেশ রস দেবেন, এতে গ্রাহকের কাছে আপনার দোকানের কদর বাড়বে। এছাড়াও আপনি প্লাস্টিকের গ্লাস এবং কাপও রাখতে পারেন, এগুলোর মাধ্যমে গ্রাহকরা আখের রস বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন। আপনি চাইলে আখের রসের সাথে অন্যান্য ফলের রস তৈরি করেও আপনার দোকানে রাখতে পারেন।

২. ঠেলাগাড়ির মাধ্যমে ব্যবসা:- গ্রাম বাংলায় হোক পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরের নানা প্রান্তে, সমস্ত ক্ষেত্রেই ঠেলাগাড়ির মাধ্যমে আখের রস বিক্রি করা হয়ে থাকে। আপনি যদি ছোট করে নিজের ব্যবসাটি শুরু করতে চান, তবে ঠেলাগাড়ি মাধ্যমে আখের রসের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে আরও একটি সুবিধা রয়েছে আপনি দিনের বিভিন্ন সময়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় আখের রস বিক্রি করতে পারবেন। তবে এইভাবে ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে তবে গ্রাহকরা আপনার কাছ থেকে আখের রস কিনবেন।

আখের রসের ব্যবসায় বিনিয়োগ:-

আখের রসের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আখের রস তৈরির মেশিন কেনার জন্য আপনার ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে। এছাড়া আপনি যদি দোকান ভাড়া নিয়ে বড় করে ব্যবসাটি শুরু করতে চান তবে আপনার ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রয়োজন হবে।

আখের রসের ব্যবসায় লাভের পরিমাণ:-

শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই আখের রস যথেষ্ট প্রিয়। সুতরাং আখের রসের ব্যবসা ভালোভাবে চলবে কিনা অথবা আখের রসের ব্যবসা থেকে লাভ হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। এমনকি শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালেই যে আখের রসের চাহিদা থাকে তা নয়, শীতকালেও আখের রসের যথেষ্ট চাহিদা থাকে। সুতরাং আপনি যদি ভালোভাবে ব্যবসাটিকে পরিচালনা করতে পারেন, তবে আখের রসের ব্যবসা থেকে আপনি প্রত্যেক মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।

Leave a Comment