বর্তমানে ভারতীয় জনগণের মধ্যে LED লাইট ব্যবহারের প্রবণতা ক্রমাগত হারে বাড়ছে। শুধু যে সাধারণ জনগণের মধ্যে LED লাইট নিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ছে তা নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও সাধারণ জনগণকে LED লাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। আর তাতেই সমগ্র ভারত জুড়ে LED লাইটের চাহিদার বাড়ার সাথে সাথেই LED লাইট সংক্রান্ত ব্যবসার সম্ভাবনাও ক্রমাগত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনিও যদি বর্তমানে নিজস্ব কোনো ব্যবসা শুরু করার কথা চিন্তা করে থাকেন তবে বাড়িতে বসেই LED লাইট তৈরির ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে আপনি যথেষ্ট টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।
কিভাবে LED লাইট তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব?
১. স্থান নির্বাচন:-
LED লাইট তৈরির ব্যবসার ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল আপনি কোথায় ব্যবসাটি শুরু করবেন তা নির্বাচন করা। এক্ষেত্রে আপনার বাড়িতে যদি যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা থেকে থাকে তবে আপনি আপনার বাড়িতেই এলইডি লাইট তৈরির ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। আপনার বাড়িতে যদি যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা না থাকে তাহলে আপনার বাড়ির নিকটবর্তী যেকোনো ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেটে কিংবা যথেষ্ট ভিড়যুক্ত এলাকায় দোকান ভাড়া নেওয়ার মাধ্যমে অথবা নিজস্ব দোকান তৈরি করে নেওয়ার মাধ্যমে আপনি LED লাইট তৈরির ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, আপনি এলইডি তৈরি করার জন্য একটি গোডাউন ভাড়া নিতে পারেন এবং এলইডি বিক্রি করার জন্য আলাদা একটি ছোট দোকান ভাড়া নিতে পারেন। এতে আপনার কাজের জায়গা পৃথক হবে এবং আপনি সহজেই দুটি দিক সামলে উঠতে পারবেন।
২. LED লাইট তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:-
LED লাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনার যে যে জিনিসপত্রগুলি প্রয়োজন হতে চলেছে তা হল:
LED বোর্ড এবং প্রয়োজনীয় চিপস্,
ধাতব বাল্ব ধারক,
তাপ কুন্ড,
ফিল্টার সার্কিট,
প্লাস্টিকের বডি এবং রিফ্লেক্টর গ্লাস,
সংযোগকারী তার এবং সোল্ডারিং ফ্লাক্স,
প্যাকেজিং এর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র,
LED উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী (হিট শৃঙ্ক ডিভাইস, মেলটিক ক্যাপ হোল্ডার ইত্যাদি),
সোল্ডারিং মেশিন,
এলসিআর মিটার,
মুদ্রাঙ্কন যন্ত্র,
ড্রিলিং মেশিন,
ডিজিটাল মাল্টিমিটার,
প্যাকেজিং মেশিন,
টেস্টার,
অসিলোস্কোপ,
লাক্স মিটার
উপরোক্ত যন্ত্রগুলি আপনি আপনার এলাকার লোকাল মার্কেট থেকে কিংবা আপনার জেলার যেকোনো বিখ্যাত ইলেকট্রনিক্স মার্কেট থেকে কিনে নিতে পারবেন। এছাড়াও এই সমস্ত সামগ্রী আপনি বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমেও কিনে নিতে পারবেন। তবে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, বাড়িতে বসেই নিজে LED তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিতে হবে। মিনিস্ট্রি অফ মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ -এর তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সংখ্যক সংস্থা নতুন ব্যবসায়ীদের LED তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আপনি এই সমস্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে ভালোমানের LED তৈরির জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার মাধ্যমে ভারতীয় যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যথেষ্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আপনি চাইলে আপনার নিকটবর্তী কৌশল বিকাশ যোজনা কেন্দ্রের মাধ্যমেও LED তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- আবেদন করুন রোলস-রয়েস উন্নতি স্কলারশিপে এবং পেয়ে যান ২৫০০০ টাকার অনুদান।
৩. LED বাজারজাতকরণ:-
আপনি যে সমস্ত LED গুলি তৈরি করবেন সেগুলি নিজের দোকানের মাধ্যমেই বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার লোকাল মার্কেটে যে সমস্ত ইলেকট্রনিক্সের দোকান রয়েছে সেই দোকানগুলিতে যোগাযোগ করে তাদের চাহিদা অনুসারে LED সাপ্লাই করার মাধ্যমেও নিজের ব্যবসাটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তবে এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে নানা ধরনের LED লাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে, আপনিও চাইলে এই ধরনের ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করে তা বিক্রি করার মাধ্যমেও যথেষ্ট টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার লাইটের গুণমান নিশ্চিত করা অত্যন্ত আবশ্যক। এছাড়াও লাইটের প্যাকেজিং যেন ভাল থাকে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেবেন।
প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ:-
নিজে LED লাইট তৈরির ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার অন্ততপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হবে। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তা করার কোনরূপ প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের তরফে যুবক-যুবতীদের ব্যবসায় উৎসাহ প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে, যে প্রকল্পগুলির অধীনে ভারতীয় যুবক-যুবতীরা অত্যন্ত কম সুদের বিনিময়ে ঋণ পেয়ে থাকে। সুতরাং আপনি যদি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান তবে এই সমস্ত প্রকল্পের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
লাভ:-
LED তৈরির ব্যবসার মাধ্যমে আপনি প্রত্যেক মাসে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন।