টাটা স্কলারশিপে আবেদন করুন এবং পেয়ে যান সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা

সমগ্র ভারতে বসবাসকারী বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাঠরত আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিভিন্ন প্রকার স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে কোনভাবেই পিছিয়ে নেই বেসরকারি সংস্থাগুলিও। সমগ্র দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে ভারতের দরিদ্র অথচ মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে। আর এই সকল বেসরকারি স্কলারশিপের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্কলারশিপ হলো টাটা স্কলারশিপ। টাটা ক্যাপিটাল লিমিটেড -এর তরফে কার্যকর এই স্কলারশিপের অধীনে থাকা ছাত্রছাত্রীরা সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। আর এক্ষেত্রে সবথেকে আকর্ষণীয় বিষয়টি হলো মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন জানাতে পারেন। সুতরাং আপনিও যদি সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তবে টাটা স্কলারশিপের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন করুন।

টাটা স্কলারশিপের অধীনে কারা আবেদন জানাতে পারবেন?

১. ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ছাত্র-ছাত্রীরাই কেবলমাত্র এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
২. ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতক স্তরে পাঠরতছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর সুযোগ পাবেন।
৩. যেসকল ছাত্র বা ছাত্রীর পরিবারের বাৎসরিক আয় ৪ লক্ষ টাকা কিংবা তার চেয়ে কম তারাই কেবলমাত্র এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে যোগ্য বিবেচিত হবেন।
৪. যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ভারত সরকারের তরফে স্বীকৃত যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন তারাই কেবলমাত্র স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
৫. টাটা ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং BUDDY4STUDY এর অধীনে কর্মরত কর্মীদের সন্তান-সন্ততি কোনোভাবেই এই স্কলারশিপের আওতায় কোনরূপ আর্থিক সুবিধা পাবে না।

আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যিক শিক্ষাগত যোগ্যতা:-

টাটা ক্যাপিটাল ফাউন্ডেশনের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন এবং অনুদান প্রদানের সুবিধার খাতিরে এই স্কলারশিপ টিকে ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে:-

১. টাটা স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ফর ক্লাস ৬ টু ১২ স্টুডেন্টস: ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা বিগত পরীক্ষায় ৬০% নম্বর পেলেই এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

২. টাটা স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ফর প্রফেশনাল আন্ডারগ্রাজুয়েট কোর্সেস: উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, ল অথবা আইন -এর মত প্রফেশনাল কোর্সগুলির অধীনে শিক্ষাগ্রহণ করছেন তারাও বিগত পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

৩. টাটা স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ফর জেনারেল আন্ডারগ্রাজুয়েট কোর্সেস: দ্বাদশ শ্রেণীতে ৬০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর যেসকল ছাত্র-ছাত্রীরা বর্তমানে BCom, BSc, BBA, BA, diploma, polytechnic এর মত কোর্সগুলিতে পড়াশোনা করছেন তারাও এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

আরও পড়ুন:- আবেদন করুন রাজ্য সরকারের জাগো প্রকল্পে। এবং পেয়ে যান ৫০০০ টাকা অনুদান।

এই স্কলারশিপের আওতায় কত টাকার অনুদান পাওয়া যায়?

১. ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের আওতায় ১২ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন।
২. স্নাতক স্তরের বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্সের অধীনে যেসকল ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করছেন তারা এই স্কলারশিপের আওতায় ৫০ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন।
৩. স্নাতক স্তরের নানাবিধ জেনারেল কোর্সের অধীনে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপ থেকে ২০ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন।

আবেদনের প্রক্রিয়া:-

টাটা স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর জন্য আপনাকে প্রথমেই চলে BUDDY4STUDY -এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.buddy4study.com/page/the-tata-capital-pankh-scholarship-programme -এ। এরপর আপনার সামনে আসা পেজটিতে আপনি এই স্কলারশিপ সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার তথ্য দেখতে পারবেন। এই পেজের নিচের দিকে থাকা স্কলারশিপের ক্যাটাগরির মধ্যে থেকে আপনার যোগ্যতা অনুসারে ক্যাটাগরিটি বেছে নিন এবং উক্ত ক্যাটাগরির অধীনে থাকা Apply Now অপশনে ক্লিক করুন। উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলেই আপনাকে আপনার ইমেইল এড্রেস কিংবা মোবাইল নম্বর অথবা google account -এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।

পরবর্তীতে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলেই উক্ত স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্মটি আপনার সামনে চলে আসবে। এরপর ওই পেজে থাকা START APPLICATION অপশনটিতে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে আপনার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, অভিভাবকের নাম, আপনার ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল এড্রেস এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সমস্ত তথ্য সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্য নির্ভুলভাবে প্রদান করতে হবে। সবশেষে উক্ত পেজে নিচে থাকার টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলি একসেপ্ট করলেই আপনার সামনে সম্পূর্ণ ফর্মটির একটি প্রিভিউ চলে আসবে। এক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করা হলে প্রয়োজনের নথিগুলি আপলোড করে SUBMIT অপশনে ক্লিক করুন, তাহলেই ফর্ম পূরণের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি কি কি?

১. ফটো আইডেন্টিটি প্রুফ (আধার কার্ড)।
২. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৩. পরিবারের বার্ষিক আয়ের সার্টিফিকেট (ফর্ম 16A/ ভারত সরকারের তরফে প্রদান করা আয়ের সার্টিফিকেট/ স্যালারি স্লিপ)।
৪. স্কুল বা কলেজে ভর্তির প্রমাণপত্র (স্কুল অথবা কলেজের আইডেন্টিটি কার্ড / Bonafide Certificate)।
৫. নতুন কোর্সে ভর্তির রশিদ।
৬. আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য।
৭. বিগত পরীক্ষার মার্কশীট।
৮. কাস্ট শংসাপত্র।
৯. প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট।

আবেদনের সময়সীমা:-

চলতি শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কবে থেকে এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে তা এখনো পর্যন্ত অফিসিয়ালভাবে জানানো হয়নি।

Leave a Comment